আমরা যখনই কয়েকজন মিলে আড্ডা অথবা গল্প বা কাজের ফাঁকে বসে গল্প বা আলোচনা করি তখন প্রায়শই আমরা অনুপস্থিত বন্ধু বা পরিচিত, অপরিচিত ব্যক্তি বা লোকের মন্দ স্বভাব আচরণ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনায় নির্ধিদায় মেতে উঠি। সোজা কথায় গীবত করি।
মন্দ স্বভাব যেমন মিথ্যা বলা, ঘুষ খাওয়া, দূর্নীতি করা, ঝগড়া বিবাদ লাগানো, একজনের কথা অন্য জনের কাছে লাগানো, টাকা কর্জ নিয়ে ফেরত না দেওয়া, অন্যের টাকা মেরে দেওয়া, বিভিন্ন লোকের হক মেরে দেওয়া, লোকটা খাটো ও কাল, ইচ্ছা করে বিভিন্ন বিপদ আপদ সৃষ্টি করা অথবা কোন দুপক্ষের মধ্যে লাগিয়ে দেওয়া, এবং কোন দুপক্ষের মধ্যে বিবাদ লাগলে তা বাড়িয়ে তোলা সহ আরো অনেক কিছু। যা আমরা একটু ধ্যান করলেই মনে করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
মানুষের নৈতিক অবক্ষয় : এ দায় কার ?
যাইহোক যখনই উপরোক্ত এসব কথা বা কাজগুলোর মনে আসে তখনই অন্যের কথা মনে হবে আর তখনই আমরা উপস্থিত সবাই মিলে ঐ লোকের সমালোচনা করা শুরু করে দেই এবং খুব মজা করে সবাই মিলে বলি।
এতে আমরা গীবত করছি একথা খুব কম সময়ই মনে থাকে। আর গীবত মানে ত মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া যাহা আমরা কেউই পছন্দ করি না।
অপরপক্ষে যখন এরকম কোন মন্দ কাজ বা দোষ এর কথা মনে আসে তখন কি কখনও মনে হয় যে এ দোষ বা মন্দ কাজ গুলো আমার মধ্যে আছে কি বা আমি করি কি না।
যদি আমি বা আমরা এরকম করে নিজের বিষয়ে চিন্তা করতে পারতাম তাহলে আমরা কখনোই অন্যের ব্যাপারে কথা বলতাম না আর নিজে ভালো হওয়ার চেষ্টা করতাম।
আরেকটা বিষয় আমরা যদি লক্ষ্য করি যে মন্দ বা দোষের বিষয়ে আলোচনা হলে তা যদি আপনার থাকে এবং আপনার সামনে বলা হয় তখন আপনি কি শুধু রাগ করবেন না পারলে তাদের অন্য কিছু করার চেষ্টা করবেন। নিশ্চয়ই মারতে চাইবেন অথবা নিদেনপক্ষে তাদের সঙ্গ চিরজীবনের জন্য ত্যাগ করবেন। তাহলে যার অগোচরে বলছেন সে শুনলে কেমন লাগবে একটু ভাবুনত।
আত্মহত্যা: প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করনীয়
আর যদি আপনার মধ্যে এ দোষ বা স্বভাব থাকে আর আপনি চিন্তা করতে পারেন তাহলে আমরা নিশ্চিত যে আপনি কখনোও উক্ত মন্দ কাজ করবেন না আর দুনিয়া আর আখেরাতে ভালো থাকবেন।
মুদ্দাকথা দোষ প্রত্যেকের ই হয়ত আছে আর যদি দোষের কথা বলতেই হয় তবে দোষী ব্যক্তিকে একা বলতে পারেন এভাবে যে ভাই আমি তোমাকে পছন্দ করি কিন্তু তোমার ঐ কাজগুলো খুব খারাপ আর মন্দ। এতে যেমন তোমার ইহকালীন ও প্রণালী ক্ষতি হচ্ছে তেমনি অন্যদেরও ক্ষতি করছ। তাই আমরা চাই আপনি এ মন্দ কাজ বা স্বভাব থেকে ফিরে আসুন।
আমরা অন্যের মন্দ দেখে আনন্দিত না হয়ে এ নিজের মধ্যে এ মন্দ থাকলে তা সংশোধন করি।
আবারও আসি মূলকথায় যখনই কোনো মন্দ বা দোষের কথা আড্ডা বা আলোচনায় আসে তখন তাহা নিজের মধ্যে আছে কি না মনে করি। যদি থাকে তবে তাহা থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করি আর ফিরে আসি।
আর এসব আলোচনা সমালোচনা করতে নিষেধ করি যদি থামাতে না পারি তবে আলোচনায় না থাকি।
লেখক: মোঃ দেলোয়ার ফারুক তালুকদার শাহজাহান আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট ও জজ কোর্ট হবিগঞ্জ এবং সদস্য শায়েস্তাগঞ্জ প্রেসক্লাব।